২০২-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর প্রস্তাবনা সমূহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সদস্য (করনীতি) মোঃ আলমগীর হোসেন-এর নিকট পেশ করেন ডিসিসিআই’র সভাপতি শামস মাহমুদ।
২৫ মার্চ, ২০২০ তারিখে ঢাকা চেম্বার ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিকট মোট ১১টি প্রস্তাব পেশ করেছে। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএ, এফসিএস এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ প্রগেসিভ হারে সকল স্তর থেকে কর্পোরেট কর হার আগামী ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে পর্যায়ক্রমে ৫%, ৭% ও ১০% হারে হ্রাস করা, কর্পোরেট ডিভিডেন্ডের আয়ের উপর ২০% এর পরিবর্তে ১০% কর নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেন, যাতে করে হ্রাসকৃত কর্পোরেট ট্যাক্স পুনঃবিনিয়োগ করা হলে, নতুনকর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ কর আহরণের নতুন উৎস সৃষ্টি হবে। ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতার কর মুক্ত আয়ের সীমা ২,৫০,০০০ টাকা হতে বাড়িয়ে ৩,০০,০০০ টাকা এবং ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর সর্বনিম্ন হার ১০% থেকে ৫% এ হ্রাস করার প্রস্তাব করেন, কারণ বর্তমান মূদ্রাস্ফীতির হার ও বর্ধনশীল জীবনযাপনের ব্যয় বিবেচনায় রেখে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি কর পক্রিয়া সহজীকরন ও করের আওতা বৃদ্ধির জন্য সম্পূর্ণ অটোমেটেড অনলাইন ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়ার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব করেন, যার ফলে দেশের কর প্রদান ব্যবস্থা সহজ হবে এবং ব্যবসার পরিবেশ সূচক উন্নয়নে এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। ডিসিসিআই’র সভাপতি, ১৫% হারে ভ্যাট প্রদান করলে কর রেয়াত নেওয়ার সুযোগ প্রদানের পরিবর্তে ৫%, ৭.৫%, ১০% অথবা যে কোন হারে ভ্যাট প্রদান করলে কর রেয়াতের সুযোগ প্রদানেরও প্রস্তাব করেন। শিল্পায়নের ধারাকে বেগবান করার জন্য রপ্তানিমুখী শিল্পপণ্য উৎপাদন বাড়াতে ও রপ্তানিবহুমুখীকরণকে উৎসাহিত করতে শিল্পপণ্য উৎপাদনে সকল প্রকার কাঁচামাল ও মেশিনারিজ এর উপর অগ্রিম কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন পাশাপাশি তৈরি পোশাক খাতের ডিজাইন এবং ডামি সেন্টার, স্যাম্পল, ইটিপি, জ্বালানি দক্ষতা এবং পরিবেশবান্ধব পণ্য ও সেবার উপর ভ্যাট অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করেন।
এছাড়াও এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য বার্ষিক টার্নওভারের লিমিট ৩ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি এবং পণ্যের ভ্যালু এডিশন বা মুনাফা অনুপাতে ৪% ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেন। বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণের আওতা এবং মান বৃদ্ধি করতে সঞ্চালন ও বিতরণ-এ বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান এবং বিদ্যুৎ খাতের আমদানি বিকল্প ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পসমূহকে উৎসাহিত করতে বেসরকারি খাতকে সাব-স্টেশন যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য অ্যাকসেসরিজ উৎপাদনে কর অবকাশ সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করেন।
একই সাথে বিশ^ব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে এ বছরের বাজেট প্রণয়নের আহŸান জানান, যাতে করে সরকার, সাধারণ জনগন এবং বেসরকারিখাত এ অবস্থা উত্তরণে সহায়ক নীতিমালা ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার সুফল পেতে পারে।
Published on: